দলবদলে ইংলিশ ক্লাবগুলোর খরচ ১৪ হাজার কোটি টাকা

গতবারের তুলনায় এবার ইংলিশ ক্লাবগুলোর খরচের পরিমাণ কমেছে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের নতুন মৌসুম শুরু হবে আজ থেকে। গতকালই শেষ হয়েছে ইংলিশ ফুটবলের গ্রীষ্মকালীন দলবদলের বাজার। অ্যাথলেটিক বিলবাও থেকে কেপা আরিজাবালাগাকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি গোলরক্ষক বানিয়ে কিনেছে চেলসি। ইংলিশ ফুটবলে এবার এটিই সবচেয়ে দামি (৭১.৬ মিলিয়ন পাউন্ড) দলবদল। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, গত ৮ বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো খেলোয়াড় কিনতে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর খরচ তুলনামূলক কমেছে।
গত বছর একই দলবদলের মৌসুমে ১.৪ বিলিয়ন পাউন্ড খরচ করেছিল প্রিমিয়ার লিগের মোট কুড়িটি ক্লাব। এবার অঙ্কটা কমে নেমেছে ১.২ বিলিয়ন পাউন্ডে—বাংলাদেশি মুদ্রায় অঙ্কটা ১৩ হাজার ৮৪ কোটি ৭৮ লাখ ৬২ হাজার ৩৮১ টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার ক্লাবগুলোর খরচ ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড কমেছে। এমনকি কাল দলবদলের শেষ দিনেও খরচের অঙ্ক কমেছে। এমনিতে দলবদলের শেষ দিনে খেলোয়াড় কিনতে ক্লাবগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ে। কিন্তু গতবারের তুলনায় এবার শেষ দিনে সেভাবে খরচ করেনি ক্লাবগুলো। এবার শেষ দিনে ক্লাবগুলোর খরচের পরিমাণ ১১০ মিলিয়ন পাউন্ড। গত বছর শেষ দিনে যেটি ছিল ২১০ মিলিয়ন পাউন্ড।
তবে ভিনদেশি লিগ থেকে খেলোয়াড় কেনায় খরচের রেকর্ড গড়েছে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো। এবার খরচ বিচারে শীর্ষ পাঁচ দলবদলের মধ্যে চারজনই ইংল্যান্ডের বাইরের লিগের খেলোয়াড়—কেপা (৭১.৬ মিলিয়ন পাউন্ড), আলিসন (৬৬ মিলিয়ন পাউন্ড), জর্জিনহো (৫৩ মিলিয়ন পাউন্ড) ও নবি কেইতা (৫২.৮ মিলিয়ন পাউন্ড)। কেপা এসেছেন বিলবাও থেকে, আলিসন রোমা থেকে, জর্জিনহো নাপোলি আর নবি লাইপজিগ থেকে। আর এই হিসেবটা শীর্ষ দশে নিলে ব্যাপারটা আরও পরিষ্কার হয়ে যায়। শীর্ষ দশ দলবদলের মধ্যে আটজনই ইংল্যান্ডের বাইরের লিগের খেলোয়াড়।
অর্থাৎ, বাইরের লিগের খেলোয়াড় কেনায় এবার বেশি মনোযোগী ছিল প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো। তাতে একটি রেকর্ডও হয়েছে। ভিনদেশি লিগের খেলোয়াড় কিনতে এবার রেকর্ড ৮৮০ মিলিয়ন পাউন্ড ঢেলেছে ক্লাবগুলো। গতবার অঙ্কটা ছিল ৭৭০ মিলিয়ন পাউন্ড। এবার প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো খেলোয়াড় কেনায় যে পরিমাণ অর্থ খরচ করেছে তার ৭২ শতাংশই ঢেলেছে বিদেশি লিগের খেলোয়াড় কেনায়। গতবার খরচকৃত মোট অর্থের শতকরা ৫৪ শতাংশ তাঁরা এ খাতে ব্যয় করেছিল।
এবার গ্রীষ্মকালীন দলবদলে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ ঢেলেছে লিভারপুল। ১৬৫ মিলিয়ন পাউন্ড খেলোয়াড় কেনায় খরচ করেছে অলরেডরা। এরপর যথাক্রমে চেলসি (১২০ মিলিয়ন পাউন্ড), ফুলহাম (১০৫ মিলিয়ন পাউন্ড) ও লেষ্টার সিটি (১০০ মিলিয়ন পাউন্ড)। খেলোয়াড় কেনায় খরচকৃত অর্থের চেয়ে খেলোয়াড় বিক্রি করে বেশি অর্থ কামানো ক্লাব তিনটি—নিউক্যাসল ইউনাইটেড, টটেনহাম হটস্পার ও ওয়াটফোর্ড। এ তিনটি ক্লাবের মধ্যে টটেনহাম তো এক কাঠি সরেস। ২০০৩ সালে দলবদলের মৌসুম চালুর পর প্রথম ক্লাব হিসেবে টটেনহাম এবার গ্রীষ্মকালীন বাজারে কোনো খেলোয়াড় কেনেনি!
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের গ্রীষ্মকালীন দলবদলের বাজার শেষ হলেও স্পেন, জার্মানি ও ফ্রান্সের এখনো বাজার সরগরম। এ তিন দেশের ঘরোয়া ফুটবলে দলবদলের বাজারের মেয়াদ ফুরোবে ৩১ আগস্ট। ইতালিয়ান ফুটবলে তা শেষ হবে ১৭ আগস্ট। পরদিন মাঠে গড়াবে সিরি আ-র নতুন মৌসুম।