মাঠের খেলাতেও দৃষ্টি কেড়েছে আঁখি

এমনিতেই ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার কারণে নজর কাড়ে আঁখি। মাঠের খেলাতেও দৃষ্টি কেড়েছে সে। ডিফেন্ডার হলেও নিয়মিত গোল পায়। গত আসরের সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছিল, করেছিল ভুটানের বিপক্ষে জোড়া গোল। আজও বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভুটান। খেলা শুরু সন্ধ্যা সাতটায়।
গতবার সেরা খেলোয়াড় হয়েছিল আঁখি।
ট্যাক্সিতে উঠতেই চালক দিলীপ কুমার ঘালির প্রশ্ন, ‘কোন দেশ থেকে এসেছেন?’
‘বাংলাদেশের সাংবাদিক, মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ টুর্নামেন্ট কাভার করতে এসেছি।’
উত্তর পেয়ে ভুটানি যুবক মহা উৎসাহে বলতে শুরু করলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়েরা চমৎকার ফুটবল খেলছে। ওদের খেলা দেখে আমি মুগ্ধ। বিশেষ করে তোমাদের ৫ নম্বর জার্সি (আঁখি খাতুন) তো অসাধারণ খেলছে।’ ভুটানের ঘরোয়া ফুটবল ক্লাব ফুনসোলিং সিটি এফসির ডিফেন্ডার প্রেমা ওয়াংচুকও আঁখির খেলা দেখে মুগ্ধ, ‘তোমাদের ৫ নম্বর জার্সির সঙ্গে একটা ছবি তুলতে চাই। এটা কি সম্ভব?’
শুধু এ দুজনের মুখেই নয়, গত এক সপ্তাহে বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলের প্রশংসা শোনা যাচ্ছে থিম্পুর সব জায়গাতেই। ট্যাক্সিচালক থেকে মুঠোফোন রিচার্জের দোকানি, রেস্তোরাঁর বয় থেকে রাস্তার ট্রাফিক পুলিশ-সবাই প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আঁখির কথাটা একটু আলাদা করেই বলছে সবাই।
আঁখি অবশ্যই এমনিতেই চোখে পড়ার মতো। উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। বাংলাদেশের এই দলের সবচেয়ে লম্বা খেলোয়াড়। উচ্চতার কারণেই পুরো দলের মধ্যে আলাদা করে নজর কাড়ে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গত দুই ম্যাচের পারফরম্যান্স। ভুটানিদের মন জয় করে নিয়েছে আঁখি।
সিরাজগঞ্জের কিশোরী আঁখি খেলে ডিফেন্ডার হিসেবে। গোল রোখাই তার আসল কাজ। তবে ওভারল্যাপ করে যেভাবে প্রতিপক্ষের ডি বক্সে আতঙ্ক ছড়ায়, তাতে তাকে নিয়ে আলাদা করে আজ কৌশল সাজাতেই পারেন ভুটানের কোচ সুং জে লি।
ভুটানের বিপক্ষে গত সাফের এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের ৩-০ ব্যবধানের জয়ে দুটি দুর্দান্ত গোল করেছিল আঁখি। প্রথমটি কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেডে। পরেরটি চমৎকার ব্যাকহিলে। আজ আবারও সামনে সেই ভুটান। আজও কি দেখা যাবে তেমন কিছু? কাল অনুশীলনের আগে কথা বলার সময় আঁখির কথায় ফুটে বেরোল আত্মবিশ্বাস, ‘ওরা ঘরের মাঠে খেলবে। স্বাভাবিকভাবেই অনেক সমর্থন পাবে। তবে আমাদের নিজস্ব খেলাটাই খেলব আমরা। চেষ্টা করব আবারও গোল করতে।’
আজকের ম্যাচ সামনে রেখে অনুশীলনে আঁখিরা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে গোল করেছিল আঁখি। খেলা শেষ হতেই গোলের ওই ভিডিওটা ভাইরাল হয়ে গেছে। আঁখি নিজেও খবরটা জানে। প্রসঙ্গটা তুলতেই বলল, ‘ওই গোলটা ভাইরাল হয়েছে দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে। আসলে ডিফেন্ডার হয়ে গোল করেছি বলে সবাই ভালো বলছে। এমন গোল আরও করতে চাই।’
ভুটানিদের মুখে মুখে তার কথা-এটা বলায় একটু লজ্জাই পেল যেন। বিদেশবিভুঁইয়ে এমন প্রশংসা অনুপ্রেরণারও কাজ করছে তার জন্য, ‘আমার খেলা যে এখানে অনেকে পছন্দ করে, সেটা আমাদের দলের লিয়াজোঁ অফিসার মীরা (মীরা তামাং) বলেছে। ম্যাচের সময় গ্যালারি থেকেও নাম্বার ফাইভ নাম্বার ফাইভ বলে ডাকে। শুনতে ভালোই লাগে। আরও উৎসাহ পাই। আরও ভালোভাবে খেলতে ইচ্ছা করে।’