মেসি-রোনালদো মদরিচের কাছে ব্যালন ডি’অর ‘রাজত্ব’ হারালেন
ব্যালন ডি’অর ট্রফি হাতে মদরিচ।
২০০৭ সালে ফিফা ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন কাকা। ব্রাজিলের সাবেক এই মিডফিল্ডার তখন জানতেন না, ব্যতিক্রমী এক ইতিহাসের অংশ হতে যাচ্ছেন তিনি। বর্ষসেরা ফুটবলারের ট্রফি জিতে কাকা এমনিতেই ইতিহাসে নাম লিখিয়েছিলেন। পরে সবাই একরকম ভেবেই নিয়েছিল, লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত তাঁদের বাইরে কাকাই সর্বশেষ ব্যালন ডি’অর জয়ী। ভুলটা ভাঙালেন লুকা মদরিচ। এবার ব্যালন ডি’অর জিতে মেসি-রোনালদোর গত এক দশকের রাজত্বের অবসান ঘটালেন ক্রোয়েশিয়ান এই মিডফিল্ডার।
কাকার পর গত এক দশকে পাঁচবার করে বর্ষসেরার এই ট্রফি জিতেছেন মেসি ও রোনালদো। এবার মেসি অবশ্য বেশ পিছিয়ে ছিলেন। বিশ্বকাপে তেমন ভালো করতে পারেনি তাঁর দেশ আর্জেন্টিনা। আর ইউরোপের ক্লাব ফুটবলেও গত মৌসুমে বড় কোনো সাফল্য পায়নি মেসির ক্লাব বার্সেলোনা। গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে টানা তৃতীয় চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী রোনালদোর সম্ভাবনা ছিল। এ ছাড়া ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ জেতানো আঁতোয়ান গ্রিজমানও ছিলেন সম্ভাব্য বিজয়ীদের আলোচনায়। কিন্তু সংবাদকর্মীদের ভোটে সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথম ক্রোয়েশিয়ান হিসেবে ব্যালন ডি’অর জিতলেন মদরিচ।
প্যারিসে গত রাতে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মদরিচের হাতে তুলে দেওয়া হয় ‘ফ্রান্স ফুটবল’ সাময়িকীর এই পুরস্কার। সর্বোচ্চ ৭৫৩ পয়েন্ট নিয়ে এই ট্রফি জিতলেন তিনি। ৪৭৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রোনালদো এবং ৪১৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় গ্রিজমান। মদরিচ যে এবার মেসি-রোনালদোর আধিপত্য ভেঙে দেবেন তা মোটামুটি ধারণা করেছিলেন বিশ্লেষকেরা। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ট্রফি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই ফাঁস হয়ে যায় কে কত ভোট পেয়েছেন, সেই তালিকায়। সেখানে মদরিচই ছিলেন বিজয়ী।
গত আগস্টে রোনালদো ও মোহাম্মদ সালাহকে পেছনে ফেলে উয়েফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছিলেন মদরিচ। পরের মাসে ফিফা বর্ষসেরা ‘বেষ্ট’ ট্রফিও তিনি জিতে নেন ওই দুজনকে পেছনে ফেলে। গত মৌসুমে রিয়ালের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা ছাড়াও উয়েফা সুপার কাপ, স্প্যানিশ সুপার কাপ ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপাও জেতেন মদরিচ। এ ছাড়া ক্রোয়েশিয়াকে প্রথমবারের মতো তুলেছিলেন বিশ্বকাপের ফাইনালে। রাশিয়ায় বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ‘গোল্ডেন বল’ও জিতেছেন ৩৩ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার।